
নুরুল আমিন
১০. তিনি তার মায়ের কাছ থেকে সাহস ও উৎসাহ পেতেন। মায়ের আদর ও বাবার স্নেহময় পরশে তিনি আলোকিত জীবনে জেগে ওঠেছেন। তিনি অন্যায়ের কাছে মাথানত করতে শিখেননি। মাহবুবুর রহমান ছোট হলেও গুণী এক তারুণ্য। তিনি ভয়কাতুরে নয়। তিনি কথা কম বলেন। কেউ রেগে গেলেও তিনি চুপ হয়ে থাকেন। কারণ তার ধারণা রেগে গেলে হেরে যাবে। চুপচাপ থাকার কারণে অনেকে তাকে ভীতু মনে করতো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তার বিপরীতে। ভেতরে ভেতরে তিনি অনেক সাহসী। তিনি লুকিয়ে লুকিয়ে রেডিও শোনতেন। রেডিওতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও খবর শোনতেন। মুক্তিযোদ্ধাদের শোনাতেন।
১১.তিনি গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন। গ্রামের মানুষকে তিনি মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিতে প্রেরণা দিতেন। সংঘবদ্ধ করতেন। দেশের গান গেয়ে গ্রামের মানুষকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। পাকসেনা ও দেশীয় রাজাকারদের ওপর নজর রাখতেন। খবর সংগ্রহ করতেন। মুক্তিবাহিনীর কাছে খবর পৌঁছাতেন। তাদের জন্য খাদ্য যোগাতেন। নিজের ঘর থেকে চাল-ডাল-টাকা দিয়ে দিতেন এবং গ্রাম থেকে তুলে দিতেন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিকুর রহমানের কাছে কিশোর বয়সী মেধাবী ছাত্র মাহবুবর রহমানের মুক্তিবাহিনীকে সহায়তা ও যুদ্ধে তার অংশ নেয়ার খবর পৌঁছালে তিনি খুব খুশী হন। মাহবুবুর রহমানকে ছাত্র-জনতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিকুর রহমানের কাছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা নিয়ে গেলে তিনি তার কম বয়স, অস্ত্র প্রশিক্ষণের কষ্ট ও ঝুঁকির কথা চিন্তা করে তাকে নিজ গ্রুপে কিছু সময় রেখে শাণিত করে তোলেন। এসময় মাহবুব কাচিয়া ও টবগি ইউনিয়নসহ ভোলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করেন। এরপর গ্রামে ফিরে আসেন।
লেখকঃ সাংবাদিক, কলামিস্ট, কথাসাহিত্যক, কবি ও প্রাবন্ধিক। লালমোহন, ভোলা। nurulamin911@gmail.com. 01759648626.