
দ্বীপকন্ঠ নিউজ ডেস্কঃভোলা চরফ্যাশনে ষাটোর্ধ্ব বয়সের প্রতিবন্ধী বৃদ্ধার বসতবাড়ি ফের জোরপূর্বক দখল সহ গাছগাছালি ক্ষমতার দাপটে কেটে নিয়ে যাচ্ছেন প্রতাপশালী সুলতান আহমদ (৪৫)। বৃদ্ধা আব্দুল মোতালেব (বেচু) চরফ্যাশনের চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর আফজাল ১ নং ওয়ার্ডের মৃত দুদু মিয়ার ছেলে। পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা আব্দুল মোতালেব (বেচু)। সে চরফ্যাশন বাজারে থানা রোডে মার্কেটের সামনে পান বিক্রি করে দুই-চার টাকা রোজগার করে কোনোরকমে সংসার চালায়।
প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা বেচু অভিযোগ করে জানায়, আমার নিজস্ব কোন জমি না থাকায় আমি দীর্ঘ প্রায় চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর ধরে, চরফ্যাশন থানাধীন চর আফজাল মৌজার ১ নং খতিয়ানের তথা খাস জমিতে বাড়ি,ঘর, পুকুর, লেট্রিন, কবরস্থান করিয়া ভোগ দখলে আছি। স্থানীয় সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে আমি সরকারের এই জমিটি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য ১০৫৩ F/১২-১৩ নং একখানা বন্দোবস্ত কেইস করে বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য আবেদন করি। আবেদনের প্রেক্ষিতে জমিটি ২০ শতাংশ ৬৮১খতিয়ানে পরবর্তীতে বন্দোবস্ত পাই। এদিকে চর আফজাল মৌজার দিয়ারা জরিপে ৭১ নং দাগের জমিতে আমার ঘরবাড়ি বিদ্যমান আছে। আমার দখলকৃত শেষ সম্বল বসত বাড়িটুকু স্থানীয় রুস্তম আলীর ছেলে সুলতান আহমদ রেকর্ড করে নিয়েছে দাবি করে ২০১৪ সালে আমার নামে চরফ্যাশন থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে। থানায় আমার সমস্ত কথা শুনিয়া এবং আমি অসহায় পঙ্গু মানুষ দেখে মিথ্যা অভিযোগ আমলে না নিয়ে ওসি সাহেব আমাকে ছেড়ে দেয়।
সেখানে আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে না পেরে বিভিন্ন হুমকি ধমকি সহ পুনরায় আমার পরিবারের লোকজনের নামে চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে এম.পি ২৩৬/১৪ ইং মামলা রুজু করলে বিজ্ঞ আদালত তদন্তভার স্থানীয় চর মাদ্রাজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে দায়িত্ব প্রদান করেন। কিন্তু ভূমিদস্যু সুলতান আহমদ ইউপি চেয়ারম্যানসহ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে চর আফজাল মৌজার ডিপি ১৪৫৮ নং খতিয়ান জাল-জালিয়াতি করে ২৪ শতাংশ জমির জায়গায় ৮০ শতাংশ জমির খতিয়ান সেটেলমেন্ট অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে দাখিল করেন এবং ইউপি চেয়ারম্যান সই সিলমোহর দিয়া আদালতে আরো উল্লেখ করেন আমি নাকি সুলতানের জমিতে জোরপূর্বক দখলে আছি। পরবর্তীতে আমার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সুবিচার পাওয়ার প্রার্থনায় চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সুলতান আহমেদ কে বিবাদী করে সি.আর ৭৮/২০১৫ ইং (চর) মামলা দায়ের করি।
পরবর্তীতে চরফ্যাশন উপজেলা মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক মনিরুজ্জামান শহীদ ও স্থানীয় তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান বাহাউদ্দিন জসিম সরমান সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সুষ্ঠু সমাধান দেবেন এই মর্মে আমি এবং সুলতান আহমদ দুজনের মামলা মোকাদ্দমা প্রত্যাহার করার শর্তে অঙ্গীকারনামা করি।
সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয় আমি আমার নামে বন্দোবস্তকৃত বসতবাড়ির এই জায়গায় বহাল থাকবো।
উক্ত জমিতে সুলতান আহমেদ কোনো ধরনের সহিংসতা তৈরি করতে পারবেন না।
ভবিষ্যতে কোনোদিন এই জমিতে তার এবং তার ওয়ারিশগণের কোনো দাবি থাকবেনা। কিন্তু সম্প্রতি সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে আমার দখলকৃত শেষ সম্বল বসতবাড়ি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছেন এবং আমার বাড়ির গাছগাছালি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
আমি সুষ্ঠু বিচার চেয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি বলে প্রতিবন্ধী বৃদ্ধার আকুতি।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত সুলতানের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলার চেষ্টা করলেও ব্যার্থ হয়ে সুলতান আহমেদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
|
|