
এম এ অন্তর হাওলাদার, বোরহানউদ্দিন
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার জাহের মাতাব্বর এর উপস্থিতিতে গরু চৌর অপবাদ দিয়ে ব্যবসায়ী মো. ইয়ামিন (৩০) কে গণ পিটানী দেয়া হয়েছে। এ ঘটনাটি মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় শান্তিরহাট এলাকার পদ্মা বিক্সস সংলগ্ন এলাকা ঘটেছে। এ ঘটনায় বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা তাদের করা হয়েছে। এ মামলার ১নং আসামী মো. আলম নামের এক যুবক কে শনিবার আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ইয়ামিন তালুকদার হাট বাজারের মুদি ব্যবসায়ী। তার উন্নত চিকিৎসা জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দৈউলা তালুকদার হাট বাজারে মুদি ব্যবসায়ী মো. ইয়ামিন ১২ জানুয়ারী, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় অট্রোবাইক করে গরুর বাচ্চা নিয়ে শশুর বাড়ী জয়া ৭নং ওয়ার্ডের মাতাব্বর বাড়ীতে যাচ্ছিলেন। জয়া শান্তির হাট এলাকার পদ্মা বিক্সস সংলগ্ন পৌছলে এক দল যুবক তার অটোবাইক গতিরোধ করে। ইয়ামিন কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে গরু চোর অপবাদ দিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে লাটি সোটা নিয়ে ২০-২৫ জন মিলে গণ পিটনি দেয়। ওদের হাত থেকে বাঁচতে অনেক কাকুতি মিনতি করেও রক্ষা পায় নি ইয়ামিন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন ওই ব্যক্তি গরু চোর নয়। তাকে গুরুত্বর অবস্থায় উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। ৩ দিন চিকিৎসার পর ইয়ামিন প্রচন্ড বমি করায় শুক্রবার তাকে ঢাকাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন। এদিকে ১৫ জানুয়ারী, শুক্রবার ইয়ামিন কে গণ পিটানোর ভিডিওটি ভাইরাল হলে পুলিশ থানায় মামলা নেয়। ইয়ামিনের বাবা সহিদুল্ল্যাহ বাদী হয়ে বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নং-১০ তারিখ ১৬-১-২০২১।
ইয়ামিনের বাবা সহিদুল্লাহ কাজী অভিযোগ করে বলেন, ওই এলাকার মেম্বার জাহের মাতাব্বর এর উপস্থিতিতে আমার ছেলে কে গরু চোর অপবাদ দিয়ে গণ পিটানি দেয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার ছেলেকে উদ্ধার না করলে ওরা আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলতো। আমি ওদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছি। আমার ছেলেটি মৃত্যু’র সাথে লড়ছে। ওর অবস্থা খুবই খারাপ। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
কুতুবা ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাহের মাতাব্বর জানান, আমার এলাকার জাহাঙ্গীর চৌকিদার বাড়ীর এক মহিলার গরু চুরি হয়েছে। তাদের গরু চোর মনে করে উনাকে ধরছে। আমি শুনে পরে গেছি। থানা পুলিশ কে খবর দিয়েছি। এখন ওরা আমার নামে মিথ্যা বলছে।
এব্যাপারে বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইন-চার্জ মাজহারুল আমিন জানান, এ ঘটনায় ৮ জনকে চিহিৃত ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা নেয়া হয়েছে। ১নং আসামীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদেরও আটক করার চেষ্টা চলছে। তিনি আরোও বলেন, এ ইউপি সদস্যকে মামলা দেয় নি। এ ঘটনা যদি ইউপি সদস্যও জড়িত থাকে তাকে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।