স্বামীর চাহিদা অনুযায়ী যৌতুকের টাকা দিতে না পাড়ায় ফাতেমা তুজ- জোহরার (৩৬) নামের এক গৃহবধূকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন এক পাষন্ড স্বামী। নিরুপায় হয়ে ওই গৃহবধূ বিচারের দাবিতে আদালতে মামলা করেছেন ।
মামলা সুত্র জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের দাশপাড়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে সেনা সদস্য এস এম আহসান হাবীব (৪০) সাথে যশোর শহরের বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোডের মৃত সুবল অধিকারী মেয়ে নব মুসলিম ফাতেমা তুজ জোহরার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বরপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল দেওয়া হয়।
বিয়ের পর কিছু দিন না যেতেই আহসান হাবীব ও তার পরিবারের লোকজন ফাতেমাকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দিতে থাকে । আহসান হাবীব তিনি বর্তমানে কক্সবাজার রামু ক্যাম্পে ল্যান্স কর্পোরাল হিসাবে কর্মরত আছেন। ফাতেমা বর্তমানে যশোর শহরের মুজিব সড়কে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে। আহসান হাবীব ছুটিতে তার বাসায় এসে থাকতেন।
ফাতেমার সুখের কথা ভেবে সরকারি চাকুরীজীবী মা তার সাধ্যমত টাকা যোগান দিতেন। ২০১৭ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি ফাতেমার কোল জুড়ে আসে পুত্র সন্তান। তার নাম আবরাহাম গাজী লাবিব (৫)। ফাতেমা ভেবে ছিলেন সন্তানের মায়ায় হয়ত তার সংসারে শান্তি ফিরে আসবে। কিন্তু তার সে আশাও পূরণ হয়নি । তার উপর চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন।
চলতি বছরের ৭ জুলাই আহসান হাবীব ছুটিতে যশোর আসেন। এ ঘটনা নিয়ে ১৫ জুলাই বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে সালিস বৈঠক হয়। সালিস বৈঠকের এক পর্যায়ে স্বামী আহসান হাবীব জমিক্রয়ের নামে ফাতেমার বাবার বাড়িতে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন । ফাতেমার মা ছুরাইয়া পারভিন (নওমুসলিম) তার আর্থিক অচ্ছলতা তুলে ধরে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আহসান হাবীবকে নিয়ে সংসার করতে আপত্তি করেন। যৌতুকের টাকা ছাড়া তার সাথে সংসার করবে বলে ফাতেমাকে জানিয়ে দেন।
এর পর ফাতেমা পটুয়াখালীর সবুজবাগ ৬ নম্বর লেন শশুর আবু ববকর সিদ্দিক এর বাসায় আসলে শশুরের পা ধরে কান্নাকাটি করলেও মন গলে না তাদের। শশুর-শাশুরী নুরজাহান বেগম ও ভাসুর আমিনুল ইসলাম মিলে গৃহবধু ফাতেমাকে মারধর করে গলায় ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন।
এবং দাবিকৃত যৌতুকের ৩ লাখ টাকা না দিলে তাকে তালাক দিয়ে আরেকটি বিয়ে করাবে বলে হুমকি দেন। যৌতুক লোভী ওই পরিবারের মন গলেনি গলা ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন ফাতেমাকে ।
এর পর ন্যায় বিচারের আশায় ফাতেমা তার স্বামী সেনা সদস্য এস এম আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ সিনিয়ার জুডিসিয়াল মেজিষ্ট্রেট সদর আমলী আদালত, যশোর একটি মামলা করেছেন।’ ফাতেমা স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন ওই মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছেন।
বর্তমানে ফাতেমা তার সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এবিষয় সেনা সদস্য এস এম আহসান হাবীব সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনে বলেন, ফাতেমা তার বিপদের কথা বলে আমাকে ডেকে নেয় এবং আমি ফাতেমাকে বিয়ে করি। বিষয়টি আমার ডিপারমেন্ট জানেন।