তৌহিদ হোসেন উজ্জ্বল ,বাউফল
স্বামীর চাহিদা অনুযায়ী যৌতুকের টাকা দিতে না পাড়ায় শিরিনা আক্তার ফাতেমা (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে অভিনব কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়াগেছে। নিরুপায় হয়ে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ কে বাঁচাতে স্বামীর পাশের ঘরের ফকর উদ্দিন বিশ্বাস ৯৯৯ ফোন দিয়ে ওই গৃহবধূকে বাঁচাতে আইনি সহায়তা চান। পরে বাউফল থানা পুলিশ স্বামীর ঘর থেকে অসুস্থ অবস্থয় গৃহবধূকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড দাসপাড়া গ্রামে গ্রামে বিশ্বাস বাড়ীতে বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনাটি ঘটেছে।
শুক্রবার সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে শিরিনার সাথে কথা বলে জানাগেছে, ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারী পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড দাশপাড়া গ্রামের মৃত্যু শামসুল হক বিশ্বাসের ছেলে মোঃ হাফিজ উল্লাহ (৪৫) এর সাথে একই উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ছোট ডালিমা গ্রামের মোঃ জয়নাল হাওলাদারের মেয়ে শিরিনা বেগমের বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় বরপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল দেওয়া হয়। বিয়ের পর কিছু দিন না যেতেই হাফিজ উল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন শিরিনাকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দিতে থাকে । শিরিনার দিনমজুর বাবা মেয়ের সংসারে শান্তি ফিরে আসবে এমন চিন্তা করে ধার দেনা করে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২ লাখ টাকা দেন। ওই টাকা পেয়ে কিছুদিন ভালো ভাবেই সংসার চলে আসছিলো তাদের। আরো ১ লাখ টাকা বাবার বাড়ী থেকে আনতে হবে বলে চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলো তার স্বামী ও স্বামীর ঘরের লোকজন। শিরিনা পুনরায় বাবা কাছে আরো এক লাখ টাকা চাইলে বাবা সম্বনা বলে জানিয়ে দেয়। পুনরায় তার উপর চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন।
এ ঘটনা নিয়ে ২৩ সেপ্টম্বর শুক্রবার বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে সালিস বৈঠক হয়। সালিস বৈঠকের এক পর্যায়ে স্বামী স্বামী হাফিজ উল্লাহ ও তার ভাই মেজবাহ উদ্দিন জমিক্রয়ের নামে শিরিনার বাবার কাছে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন । এ সময় তার (জয়নাল) আর্থিক অ”ছলতা তুলে ধরে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে হাফিজ উল্লাহ থাকে (শিরিনা) নিয়ে সংসার করতে আপত্তি করেন। যৌতুকের টাকা ছাড়া তার সাথে সংসার করবে বলে শিরিনাকে জানিয়ে দেন। এর পর শিরিনা শশুর হাফিজ উল্লাহ ও তার ভাই মেজবাহ উদ্দিনের পা ধরে কান্নাকাটি করলেও মন গলে না তাদের। এক পর্যায়ে স্বামী ও দেবর মিলে গৃহবধু শিরিনাকে মারধর করে করে গলায় ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। এবং দাবিকৃত যৌতুকের ৩ লাখ টাকা না দিলে তাকে তালাক দিয়ে আরেকটি বিয়ে করাবে বলে হুমকি দেন। ঠিকমতো খাবার দেয়া হতোনা শিরিনাকে।
শিরিনার আর্তনাদ ও মায়া কান্নায় পাশের ঘরের লোক জনের মন গললেও যৌতুক লোভী ওই পরিবারের মন গলেনি। বুধবার (২৮ সেপ্টম্বর) ঘর থেকে তারাবার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মারধর করলে অসুস্থ’ হয়ে পরে শিরিনা। পুলিশের সহায়তায় শিরিনা বর্তমানে বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় আছে। এ দিকে কোণ ধরনের আইনি পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছেন স্বামী ও দেবর। হাসপাতালেও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন শিরিনা। এ বিষয়ে ওই বাড়ীর হাবিবুল্লা বিশ্বাস বলেন,এ পর্যন্ত হাফিজ উলালাহ তিনটি বিয়ে করেছেন। বিয়ের কিছুদিন পরেই বিভিন্ন অজুহাতে শুশুর বাড়ীর কাছ থেকে টাকা আনে। বছর খানেক পরেই তালাক দিয়ে তারিয়ে দেয়াটাই তার অভ্যাস।
এবিষয় শিরিনার স্বামী হাফিজ উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, মারধরের ঘটনা সত্য নয়। য়ৌতুক চাওয়ার কোন বিষয় না। আমি শারিরিক ভাবে অক্ষম তাই ওকে রাখবোনা। বিষয়টা আপনারা মিমাংশা করে দেন।###
Related