1. admin@dipkanthonews24.com : admin :
কলাপাড়া হাসপাতালে চরম দুর্নীতি ও অনিয়ম, সেবা পাচ্ছেন না সাধারন রোগীরা - দ্বীপকন্ঠ নিউজ ২৪
বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ০২:৪০ অপরাহ্ন

কলাপাড়া হাসপাতালে চরম দুর্নীতি ও অনিয়ম, সেবা পাচ্ছেন না সাধারন রোগীরা

এস এম আলমগীর হোসেন, কলাপাড়া
  • প্রকাশিত : বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২
  • ৬৮ বার পঠিত

এস এম আলমগীর হোসেন, কলাপাড়া

 কলাপাড়া হাসপাতালের কতিপয় ডাক্তার ও নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, ঔষুধ স্বল্পতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিলেও সেগুলোর সেবা পাচ্ছে না জনগণ। কলাপাড়া হাসপাতালে দালালদের দৌড়াত্ম্য। টাকা ছাড়া মেলে না স্বাস্থ্যসেবা। কতিপয় ডাক্তারের কক্ষে ১ থেকে ২ জন করে ল্যাব-ক্লিনিকের রোগী ধরা দালাল থাকে। ওসব দালাল দিয়ে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ল্যাব-ক্লিনিকে পাঠানো হয়, তাও তাদের নির্দিষ্ট ল্যাব-ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে, না করলে ওই রোগী দেখে না, এবং রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

আরও অভিযোগ রয়েছে জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা টাকা ছাড়া সেলাই, প্লাস্টার, ড্রেসিং করেন না, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের খোঁজখবর রাখে না কেউই, হাসপাতালে বহিরাগত থাকে সবচেয়ে বেশি, এ বহিরাগতরা হাসপাতালে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে, যেমন গত ২২ মার্চ-২০২২ তারিখে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণের পর তাকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ সময় ফের হাসপাতালেই তাকে ধর্ষণ করে, এ ঘটনায় ৩ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এছাড়াও হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে রাখা হয়েছে বর্জ্য, হাসপাতালের বাথরুমগুলো বেহাল দশা, বিদ্যুৎ গেলে অন্ধকারে থাকতে হয় রোগীদের, বিভিন্ন ওয়ার্ডে ফ্যান ও বাতি নেই, সরকারি এক্স-রে দুই শ’ টাকা, নেওয়া হচ্ছে ২শ’ ৫০ টাকা থেকে পাঁচ শ’ টাকা পর্যন্ত, হাসপাতালে সরকারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ রোগীদের অতিরক্ত টাকা দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয় বাইরে গিয়ে, হাসপাতালে অপারেশনের জন্য যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও হচ্ছে না অপারেশনের কার্যক্রম,

হাসপাতালে যেখানে একজন ডেলিভারি রোগী থেকে সামান্য কিছু টাকা খরচের মাধ্যমে সেবা নিত, সেখানে বেসরকারি ক্লিনিক খরচ হচ্ছে ২৫-৩০ হাজার টাকা। আর এসব অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান চালাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। তারা অর্থের লোভে নানা অজুহাতে রোগীদের বাধ্য করে বেসরকারি এবং অনুমোদনহীন এসব প্রতিষ্ঠানে  যেতে। এ নিয়ে রোগীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। হাসপাতালে খাবারের মান নিয়ে রয়েছে নানা অনিয়ম, কলাপাড়া হাসপাতালের কয়েক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কর্মকর্তার পদ দখল করে কার্যক্রম চালাচ্ছে, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির শেষ নেই। কলাপাড়া হাসপাতালের কতিপয় ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যুগ যুগ ধরে কর্মরত রয়েছে, এবং করেছে বাড়ি গাড়ি ও বিপুল সম্পত্তি, তাদের চলাফেরা বিলাসিতা।

এমন নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না স্বাস্থ্য বিভাগ। অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কতিপয় ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ বিষয়ে একের পর এক পত্রপত্রিকা ও অনলাইন নিউজপোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে, তারপরও নিশ্চুপ স্বাস্থ্য বিভাগ। মাঝেমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, ওই কমিটি পর্যন্তই শেষ, ফের শুরু হয় দুর্নীতি ও অনিয়ম।

নাম না বলার ইচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মচারী বলেন, আপনারা সাংবাদিক এবং ভুক্তভোগীরা ফেসবুকে লেখালেখি করলে উপরের স্যারেরা আমাদের ও স্যারেরদের শোকজ দেয়, উত্তরে স্যারেরা লেখে হাসপাতালে কোন দুর্নীতি অনিয়ম হচ্ছে না, মানুষ সেবা পাচ্ছে, যারা রিপোর্ট করছে, ফেসবুকে পোস্ট করছে তারা মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে ইত্যাদি ইত্যাদি এবং আমাদের কাছ থেকে সুবিধা না পাওয়ার কারণে এসব মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে!

কলাপাড়া সম্মিলিত নাগরিক অধিকার জোট’র সাধারণ সম্পাদক গৌতম হাওলাদার বলেন, কলাপাড়া হাসপাতালে ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যুগ যুগ ধরে থাকায় দুর্নীতি ও অনিয়ম বেড়েছে, সময় মত তাদের বদলি করা হলে এত দুর্নীতি করতে পারত না, শিগগিরই তাদের বদলি করা হোক। তা না হলে আরও মহামারি ধারণ করবে।

প্রবীণ সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল্লাহ রানা বলেন, ওই সকল দুর্নীতিবাজ ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছি, কিন্তু তাদের টাকা ও ক্ষমতার কাছে আমরা কলাপাড়াবাসী হেরে গেছি, ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যুগ যুগ ধরে হাসপাতালে কর্মরত থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ করেছে, এখনই সময় এদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দমন কমিশনার অভিযান চালানোর।

পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান বলেন, কলাপাড়া হাসপাতাল চিকিৎসকরা ক্লিনিক ব্যবসায়ের কারনে চিকিৎসাসেবা রোগীরা পাচ্ছেন না এটা এ শুনলাম। যদি কোন চিকিৎসক এভাবে করে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো পড়ুন