মোঃ সানাউল্লাহ, বরগুনা
মৃত্যুপুরী হিসেবে খ্যাত বরগুনার কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। আজ (২৩ ফ্রেব্রুয়ারী) বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমান। জানা যায়, বরগুনার বদরখালী এলাকার তানজিলা পুতুল নামে এক প্রসূতি এই হাসপাতালে ভর্তি হয়। গত (২১ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে সিজারের মাধ্যমে এক নবজাতকের জন্ম হয় তার। তবে অপারেশন শেষ হলেও জ্ঞান ফেরেনি ওই প্রসূতির। এরপর গতকাল রাতে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে মধ্যরাতের দিকে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। এরপর থেকে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এঘটনার পর গতকাল (২২ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকেই হাসপাতালে তালা লাগিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে হাসপাতালটির মালিক ও স্টাফরা। বিষয়টি নিয়ে “বরগুনায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু” শিরোনামে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ক্লিনিকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। এসময় হাসপাতালের কতৃপক্ষ, ডাক্তার, নার্সদের না পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। এবিষয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স আছে কিনা দেখার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের কোন কতৃপক্ষকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকটি তালা লাগানো ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতে পরিচালনার সময় সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এই ক্লিনিকে। এছাড়াও কয়েক বছর আগে এই হাসপাতালে ভর্তি এক নবজাতক চুরি করে বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পরে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার। প্রতি বছরই এখনে ভুল চিকিৎসায় কোন না কোন প্রসূতি মারা যায়। সবশেষ ২১ ফেব্রুয়ারী আরেক প্রসূতির মৃত্যু হয়, স্বজনদের দাবি ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তার। ভুল চিকিৎসায় আর কোন রোগীর মৃত্যু না হয়, সেজন্য এই হাসপাতালটি বন্ধের দাবি ওঠে সচেতন মহলে।