বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্নীঝড় মোখার তান্ডবের ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়ছে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। ক্্রমে এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে উপকুলের দিকে ধেয়ে আসছে।
আাবহাওয়া অধিদপ্তর সুত্রে সবশেষ তথ্যে জানাযায়, ঘূর্নীঝড় মোখায় ভোলার অদুরবর্তী উপকুল গুলোতে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মনপুরার সমুদ্রগামী জেলেরা সাগর থেকে ফিরে তাদের নিজ নিজ ঘাটে আশ্রয় নিয়েছে। বেড়ী বাঁধের বাহিরে এবং চরাঞ্চলগুলোতে বসবাসরত সকল মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকিং করে সতর্কবাতা জানাচ্ছেন।
আসতে আসতে বাতাসের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল রাত থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মনপুরার মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষ বেশী আতংকিত হয়ে পড়ছেন। বিচ্ছিন্ন চর মহাজনকান্দিতে বসবাসরত পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আশার জন্য উপজলা প্রশাসন স্থানীয় চেয়ারম্যানদের নিদেশ দিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ঘূনিঝড় প্রস্তুতি কমসূচী সিপিপি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগন জনসাধারনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য মাইকিং করছেন। উপজেলা প্রশাসন আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি শুকনো খাবার খবার মজুদ করে রেখেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ঝুকিপুর্ন বেড়ীবাঁধগুলো মেরামত করছেন। উপজেলা প্রশাসন ঘূর্নীঝড় মোখা মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্রেগুলো প্রস্তুত করে রেখেছেন। মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার জন্য ব্যাবস্থা করেছেন। উপজেলা প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। ঝুঁকিপুন বেড়িবাধঁ পরিদশন করেন উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগন। মোখার ভয়ে আতংতিক হয়ে সাধারন মানুষ আ¤্রয়কেন্দ্রে উঠতে শুরু করেছেন। প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের জন্য শুকনা খবার ব্যাবস্থা করেছেন। মহাজন কান্দিতে বসবাসরত মানুষকে হাজিরহাট মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠবেন। সিপিপি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগন মোখা মোকাবেলায় সাধারন জনগনকে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে মাইকিং করে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন। প্রশাসন সার্বক্ষনিক যোগাযোগের জন্য কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্র ও ঝুঁকিপুন বেড়ীবাধঁ পরিদর্শন করেন চরফ্যাশন উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) ও মনপুরা উপজেলা দুর্যোগকালীন সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহি অফিসার আঃ মতিন খান, উত্তর সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন, মনপুরা ইউপি চেয়ারম্যান আমানতউল্যাহ আলমগীর, হাজির হাট ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নিজামউদ্দিন হাওলাদার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা মোঃ ইলিয়াছ মিয়া, মনপুরা উপজেলা সিপিপি টিম লিডার এরফানউল্যাহ অনি চৌধুরী, পানি উন্নয়ন বোর্ড উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রহমান প্রমুখ।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা মোঃ ইলিয়াছ মিয়া জানান, ঘূর্নীঝড় মোখা মোকাবেলায় উপজেলায় মোট ৮০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে ৯৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সার্বক্ষনিক খোজখবর রাখার জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
এব্যাপারে মনপুরা দুর্যোগকালিন সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহি অফিসার আঃ মতিন খান বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন সকল প্রস্তুৃতি সম্পন্ন করেছন। বিচ্ছিন্ন চর মহাজনকান্দি থেকে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেল নাগাদ ট্রলার যোগে চরাঞ্চলে বসবাসরত সকল বাসিন্দাকে আ¤্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন। বেড়ীবাঁধের ৮টি স্থানে ঝুকিপূর্ন ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগীতায় সেসব ঝুকিপুর্ন বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের জন্য শুকনা খাবার মজুদ করে রাখা হয়েছে। আমরা ইতি মধ্যে ২০হাজার টাকা ও ৫ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্ধ পেয়েছি।