ইব্রাহিম আকতার আকাশ,ভোলা:
ভোলায় বাক প্রতিবন্ধী এক ভিক্ষুককে পিটিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী। পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলমান রয়েছে। শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেলে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ব্যারিষ্টার কাচারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী বাক প্রতিবন্ধী শাহাবুদ্দিন বাপ্তা ইউনিয়নের উত্তর বাপ্তা গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্ত নুরে আলম ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের সোনাডুগী গ্রামের মজিবল হকের ছেলে।
মামলায় বর্ণিত করা হয়েছে, বাক প্রতিবন্ধী শাহাবুদ্দিন মানুষের কাছে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত ২৫ জুলাই সন্ধ্যায় শাহাবুদ্দিন ভিক্ষা করতে ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ব্যারিষ্টার কাচারি এলাকায় যায়। এসময় অভিযুক্ত নুরে আলমের কাছে বিনয়ের সঙ্গে ভিক্ষা চাওয়া হয়। নুরে আলম তাকে চলে যেতে বললে শাহাবুদ্দিন চলে না গিয়ে তার হাত ধরে কিছু টাকা ভিক্ষা চায়। গায়ে হাত দিয়ে ভিক্ষা চাওয়ায় নুরে আলম ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে থাপ্পড় দেয়। শাহাবুদ্দিন থাপ্পড়ের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর মাটি থেকে উঠে দু’হাত উপরের দিকে তোলে আল্লাহর নিকট বিচার দেন৷ ভিক্ষুকের এমন কাণ্ড দেখে উত্তেজিত হয়ে প্রায় ১০-১৫ জন মানুষের সামনে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে ২ হাজার দুইশ টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মো. তৈয়বুর রহমান জানান, মারধরের আঘাতে বাক প্রতিবন্ধী শাহাবুদ্দিনের থুতনি, দু’হাত ও হাঁটু আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনার বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি অমানবিক উল্লেখ করে অনেকেই মন্তব্য করেন। মুহুর্তে হামলার ছবিগুলো ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং মামলার ৪ নম্বর সাক্ষী আলাউদ্দিন ফরাজি জানান, বিত্তের অহংকার এবং দাম্ভিকতা দেখিয়ে নুরে আলম প্রতিবন্ধী শাহাবুদ্দিনকে বেধড়ক মারধর করেছে। নুরে আলম স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তাৎক্ষণিক কেউ এ ঘটনার প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। ঘটনার সময় উপস্থিত সকলেই এ দৃশ্য দেখে আপসোস করেছেন।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির জানান, বাক প্রতিবন্ধী শাহাবুদ্দিনের উপর হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। শাহাবুদ্দিন ভোলা শহরের প্রায় সকল জায়গায়ই ভিক্ষাবৃত্তি করে। তাকে এভাবে মারধরের ঘটনা অত্যান্ত দুঃখজনক এবং অমানবিক। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের অভিযান চালাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব দ্রুতই আসামিকে গ্রেফতার করা হবে।