জাহিদ দুলাল, লালমোহন:
বর্তমানে খাল বিল জলাশয় ও নদীতে পানি থাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বেসাল/বেকজাল জালে মাছ ধরা জেলেরা। চারিদিকে পানি খালে বইছে জোয়ার ভাটা তাই বেসাল/বেকজালে মাছ ধরা জেলেদের ঘরে আনন্দের সুবাতাস। খালে পানি থাকলেই বেসালজাল জেলের আনন্দ। বর্তমানে তাদের প্রতিদিন সময় কাটছে মাছ ধরা, বিক্রি ও জাল মেরামত নিয়ে।
খাল বিল জলাশয়সহ চারদিকে এখন শুধু পানি থৈ থৈ করছে। চারদিকে পানি থাকায় ভোলার লালমোহন উপজেলার ৬০ বছর বয়সী ভেসাল জেলে তোফাজ্জল হোসেন মুন্সি এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রায় ৪০ বছর ধরে খালের বিভিন্ন স্থানে ভেসাল জালে মাছ শিকার করছেন তিনি। দিন অথবা গভীর রাত, যখনই খালে ভাটা শুরু হয় তখনই মাছ শিকার করতে ভেসাল জাল পাতেন। জাল উঠানোর পর সেখানে পাওয়া যায় চিংড়ি, কুলি, পুঁটি ও টাকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। যা বিক্রি করে প্রতিদিন আয় হয় প্রায় পাঁচশত টাকা। এই আয়ে চলছে জীবন জীবিকা।
তোফাজ্জল হোসেন মুন্সি বলেন, ছোটবেলা থেকেই মাছ শিকারের সঙ্গে আছি। প্রথমে নদীতে বেড় জালের মাধ্যমে মাছ শিকার করতাম। তবে সেখানে বেশি পরিশ্রম হওয়ায় তা বন্ধ করে দিয়েছি। এরপর ভেসাল জাল দিয়ে খালে মাছ শিকার শুরু করি। তিনি আরও বলেন, এই ভেসাল জালে পাওয়া মাছ বিক্রির টাকায় সংসার চালাচ্ছি। সংসারে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে বড় ছেলেকে এই মাছ বিক্রির টাকায় পড়ালেখা করিয়েছি। এছাড়া সংসারের সবার তিন বেলা খাবার ও অন্যান্য খরচ এই ভেসাল জালে পাওয়া মাছ বিক্রির টাকাই চলে। তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বয়স হয়েছে তাই রাত-বিরাতে এই মাছ শিকার করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তবুও পেটের তাগিদেই এক প্রকার বাধ্য হয়ে ভেসাল জাল দিয়ে মাছ শিকার করছি। তবে এখন আর শরীর চলছে না। তাই সরকারি-বেসরকারি অনুদান পেলে অন্য পেশা বেছে নিতাম। তাহলে কষ্ট কিছুটা কমতো। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কিছুটা শান্তিতে থাকতে পারতাম।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলার সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানভীর আহমেদ জানান, মৎস্যজীবীদের জন্য ভিজিএফ চালসহ সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এ সুযোগ-সুবিধা পেতে হলে ভেসাল জালের জেলেদের প্রথমে নিবন্ধনের আওতায় আসতে হবে। এরপরও বয়সজনিত কারণে অথবা অঙ্গহানির ফলে মাছ শিকারে অসুবিধা হলে তাদেরকে সরকারিভাবে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।