ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পাল্টে দিয়েছে ভূমিহীন-গৃহহীনদের জীবনমান। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর অনেকেরই জীবন পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে। গৃহহীনদের জীবনের বেশী ভাগ সময় কেটেছে ভাসমান অবস্থায়, তাদের ছিলনা কোন স্থায়ী ঠিকানা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরসহ জমির মালিকানা পেয়ে খুঁজে পেয়েছেন তাদের আসল ঠিকানা। বর্তমানে তারা নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন ভূমিহীন, গৃহহীন ও নিন্ম আয়ের মানুষগুলো প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা। অসহায় ছিন্নমূল উপকার ভোগী পরিবার পরিজনরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করেন। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তজুমদ্দিনে প্রথম পর্যায়ে ১৮ টি এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫০টি, তৃতীয় পর্যায়ে ১৮৪টি, চতুর্থ পর্যায়ে (১ম ধাপে) ১৬৩টি গৃহ ও চতুর্থ পর্যায়ে (২য় ধাপে) উপজেলার চাঁদপুর ও চাচঁড়া ইউনিয়নে আরো ১৩৭ টি ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এনিয়ে তজুমদ্দিনে মোট ৬৫২ টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। উপজেলায় অবশিষ্ট ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারসমূহকে সরকার হতে বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে অতিদ্রুত পূনর্বাসন করা হবে। ৬৫ বছর বয়সী মো: আবদুল জলিল বলেন, আমার কোন ছেলে মেয়ে না থাকায় অনেক কষ্টে দিন কাটতো আমার দুবেলা দুমুঠো ভাত খেতে পারলেও ছিলোনা থাকার কোন স্থায়ী ঠিকানা এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ঘর পেয়ে স্থায়ীভাবে থাকতে পারছি। শম্ভুপুর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ডের ৪৬ বছর বয়সী রহিমার সঙ্গে কথা হচ্ছিলো, চোখে অশ্রু ভেজা কন্ঠে বলেন, নিজের স্থায়ী দুই শতাংশ জমিসহ ঘর হবে কখনো কল্পনাও করিনি। এখন অন্তত মাথা গোঁজার ঠাঁই হওয়ায় আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি অনেক খুশি। ঘর পেয়ে সাজিয়েছেন নিজের মনের মতো করে। ঘরের চারদিকে শাক সবজি, ফলগাছ লাগিয়ে সবুজের সমারোহ করে নজর কেড়েছেন। শুধু জলিলে,রহিমা নয়, তার মতো মহিউদ্দিন , হোসনেয়ারা, শাহীন, হেলাল উপহারের ঘর পাওয়া নিম্ন আয়ের সবারই স্বপ্ন ও জীবন-যাপনে পরিবর্তন এসেছে। হঠাৎ এমন পরিবর্তনে একদিকে যেমন উচ্ছাসিত তারা। অপর দিকে নতুন করে বাঁচার তাগিদ তাদের মনে। শুধু নিজের ঘর নয়, পুরো প্রকল্প এলাকাটা সেজেছে সবুজ সমারোহে। তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভ দেবনাথ বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের কোন মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবেনা। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২ এর আওতায় সারাদেশের মতো তজুমদ্দিন উপজেলায় উপকারভোগীদের মাঝে ৬৫২টি গৃহ ইতিমধ্যেই হস্তান্তর করা হয়েছে। দুই শতাংশ জায়গাসহ সেমিপাকা একটি ঘর করে দেয়া হচ্ছে সঙ্গে আছে রান্নাঘর, টয়লেট, আর্সেনিক মুক্ত পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ স্কুলসহ আঙিনায় হাঁস মুরগি পালন ও শাক সবজি চাষের ও সুব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত পরিবারগুলোর জীবন যাত্রার মানউন্নয়ন হচ্ছে বলে আমি মনে করি। ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার আছে তাদের বাসস্থানের সুযোগ পাওয়া। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন করেছেন প্রতিনিয়ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই এই প্রিয় লাল সবুজের দেশকে মানবিক কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণতি করার মহতী বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তায়ন করেছেন। এই মানবিক কর্মসূচি মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঠিকানা বিহীন আশ্রয়হীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য গৃহীত প্রকল্প। গৃহীত প্রকল্প এলাকায় তাদের কর্মসংস্থানে শাক-সবজি, ফল-ফলাদী চাষ ও গবাদিপশু পালনসহ তাদের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য স্কুল, মসজিদ ও মাদ্রাসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমি আন্তরিকভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।