1. admin@dipkanthonews24.com : admin :
মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতি ও জনবলের সংকটে স্বাস্থ্যসেবা . ৬৭পদ দীর্ঘদিন শূন্য - দ্বীপকন্ঠ নিউজ ২৪
মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন

মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতি ও জনবলের সংকটে স্বাস্থ্যসেবা . ৬৭পদ দীর্ঘদিন শূন্য

মোঃ ছালাহউদ্দিন,মনপুরা
  • প্রকাশিত : সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৮৩ বার পঠিত

মোঃ ছালাহউদ্দিন,মনপুরা

ভোলার মনপুরায় দেড়লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসা সেবার এক মাত্র স্বাস্থ্যকমপ্লেক্্ের প্যাথলিজিক্যাল যন্ত্রপাতি জনবল সংকটের কারনে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। প্যাথলিজিক্যাল যন্ত্রপাতি, বিদ্যুৎ সমস্যা ও জনবলের অভাবসহ নানান সমস্যায় জর্জড়িত রয়েছে উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্যকমপ্লেক্্রটি। ৩১ শয্যার হাসপাতালটি গত ২১শে জুন ২০১৪ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে উদ্ভোধন করা হলেও এখনও চালু হয়নি। স্বাস্থ্যকমপ্লেক্্রটি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি ও আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপির’র উদ্ভোধনের ৯ বছর পার হলেও এখনও আর্থিক অনুমোদন পায়নি। যার ফলে জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় প্যাথলিজিক্যাল যন্ত্রপাতি এবং বিদ্যুতের অভাবে চালু হয়নি নবনির্মিত ৫০ শয্যা হাসপাতালটি। জনবল সংকটের কারনে সাধারন রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্যকমপ্লেক্্রটি ১০১টি পদের মধ্যে ৬৭ টি পদ দীর্ঘদিন পর্যন্ত শূন্য। ৫ জন ডাক্তার কর্মরত আছেন। দৈনিক ৩শতাধিক রোগী দেখছেন ডাক্তাররা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিকিৎসকের ১০টি পদের মধ্যে ৫টি পদ শূন্য। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী,মেডিসিন,গাইনী,এনেসথেসিয়া,ডেন্টাল সার্জন পদ দীর্ঘ দিন শূন্য রয়েছে। সিনিয়র স্টাফ নার্স ও সহকারী নার্সের ২৫ টি পদের মধ্যে ২০ট পদ শূন্য। সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ৫টি পদের মধ্যে ৪টি পদ শূন্য। মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান ল্যাভ ৪টি পদের মধ্যে ৪টি শূন্য। মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট ডেন্টাল ১টি পদ শূন্য। এমটি রেডিও গ্রাফার ১টি পদ শূন্য। ফার্মাসিষ্ট ৪টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। মিডওয়াইফ ৪টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। স্বাস্থ্যসহকারী ১টি পদ শূন্য। মেডিক্যাল টেকনোলোজিস্ট রেডিওলোজি এন্ড ইমাজিং ১টি পদ শূন্য। মেডিক্যাল টেকনোলোজিস্ট এস.এল ১টি পদ শূন্য। মেডিক্যাল টেকনোলোজিস্ট বিসিজি ১টি পদ শূন্য, পরিসংখ্যানবিদ ১টি পদ শূন্য। ষ্টোরকিপার ১টি পদ শূন্য। স্বাস্থ্য সহকারী পরিদর্শক ২টি পদের মধ্যে ২টি পদ শুন্য। স্বাস্থ্যসহকারী ১০টি পদের মধ্যে ৩টি পদ শূন্য। জুনিয়র ম্যাকানিক ১টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ২টি পদের মধ্যে ২টি পদ শূন্য। সহকারী নার্স ১টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। হারবাল সহকারী গার্ডিনার ১টি পদ শূন্য। সিকিউরিটি গার্ড ২টি পদের মধ্যে ২টি পদ শূন্য। আয়া ২টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য । অফিস সহায়ক ৫টি পদের মধ্যে ৪টি পদ শূন্য। ড্রাইভার ১টি পদ শূণ্য। সুইপার ৫টি পদের মধ্যে ৪টি শূন্য। ওয়ার্ড বয় ৩টি পদের মধ্যে ২টি পদ শূন্য।

জনবল সংকট ও প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। প্যাথলজিক্যাল সংক্রান্ত ইন্সট্রুমেন্টগুলোও পরিচর্যার অভাবে প্রায় অকেজো।

একটি এম্বুলেন্স ও একটি নৌ এম্বুলেন্স আছে হাসপাতালে। নৌ এম্বুলেন্স থাকলেও তা বিকল হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। নৌ এম্বুলেন্সের অভাবে মুমূর্ষ রোগীদের হাসপাতাল থেকে দ্রæত চিকিৎসা সেবা দিতে অন্য উপজেলায় বা জেলায় পাঠানো সম্ভব হচ্ছেনা। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারন রোগীরা। দ্রæতগামী একটি নৌ এম্বুলেন্স দাবী করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারন মানুষ। জনবল সংকট, প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের প্রতিদিনকার কার্যক্রম। ডাক্তাররা পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া রোগী দেখছেন। জনবল সংকট ও প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির অভাব ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারনে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা

বিচ্ছিন্ন এই উপজেলায় প্রধান সমস্যা গর্ভবতি মায়ের। এই উপজেলায় গাইনী কোন ডাক্তার না থাকায় ঝুঁকিতে থাকেন গর্ভবতী মায়েরা। বর্ষামৌসুমে মূমূর্যরোগীদের নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এতে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৪৫জন। শয্যা আছে ৩১টি । অবশিষ্ট ভর্তিকৃত রোগীদের বারান্দায় চিকিৎসা দিচ্ছেন । কোথাও কোন সীট খালি না থাকায় বাধ্য হয়ে বারিন্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। বৃষ্টি হলে রোগীরা ভিজে যায়। খুব কষ্ট করে কোন মতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক রোগী সীট না পাওয়ায় বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন।

প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, ডাক্তার থাকলেও সঠিক রোগ নির্নয় করার কোন প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির ব্যাবস্থা না থাকায় প্রকৃত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেননা রোগীরা। ৩১ শয্যা হাসপাতালটি ৫০ সয্যায় উন্নতি হলেও এখনও চালু হয়নি নবনির্মিত হাসপাতালটি। দ্রæত হাসপাতালটি চালুর দাবী করেন তিনি।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশিকুর রহমান অনিক বলেন, আমরা হাসপাতালে প্রকৃত সেবা দেওয়ার জন্য আপ্রান চেষ্ঠা করে যাচ্ছি। তবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসা সেবা দিতে পারলে আরো ভালো হতো।

এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ কবির সোহেল বলেন, আমরা আন্তরিকতার সহিত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি। এখানে জনবল ও প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে সত্যি। আমাদের প্রধান সমস্যা বিদ্যুত। দিনের বেলায় কোন বিদ্যুতের ব্যাবস্থা না থাকায় আমরা কোন রোগীদের পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে চিকিৎসা সেবা দিতে পারছিনা। বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান এবং ডাক্তার ,নার্স ও জনবল সংকট সমাধান করতে পারলেই আমরা ভালো চিকিৎসা দিতে পারবো। রাতে ১টার পরে হাসপাতালে কোন বিদ্যুত থাকেনা।
তিনি আরো বলেন, ৫০ শয্যায় উন্নীত হাসপাতালটি ২০১৮ সালে প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছেন। এখনও আর্থিক অনুমোদন পাননি। এই জন্য হাসপাতালটি চালু করতে পারিনি। আমি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি’র সাথে এই বিষয় কথা বলেছি। তিনি হাসপাতালটি চালুর বিষয় চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন।

মনপুরা দ্বীপের দেড়লক্ষাধিক মানুষের প্রানের দাবী সরকার চিকিৎসা সেবা মানুষের দোড় গোড়ায় পৌছানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতি, জনবল সংকট ও বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয়রা ।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো পড়ুন
error: Content is protected !!