মোঃ ছালাহউদ্দিন,মনপুরা
বঙ্গোপসাগরে অবরোধের সময় ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে ১১দিন ধরে এফবি রিনা-১ নামে একটি মাছ ধরা ট্রলারসহ ২০ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
শনিবার ৪ নভেম্বর দুপুর ২টার দিকে এফবি রিনা-১ ট্রলার মালিক মোঃ আক্তার হোসেনএ তথ্য নিশ্চিত করেন। ১১দিন পার হলেও সন্ধান না পাওয়ায় তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন পরিবারের লোকজন। অনেকে মনে করছেন ঘূর্ণীঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে তলিয়ে গেছে ট্রলারটি। নিখোঁজ জেলেরা হলেন , এফবি রিনা-১ ট্রলারের মাঝি জাহাঙ্গীর(৪০),শেখফরিদ(৫৫),সিদ্দিক(৪৫),শামীম(২৩),আলাউদ্দিন(৫৬),আবুল খায়ের (৬৫), বাতেন(৪০),ইয়াছিন(৩৫),জয়নাল আবদীন(৭০),মিলন(৩৫),ইসলামআলী(৫৫),ফিরোজ(৪৫),সোহাগ(৪৫),অলিউদ্দিন(৪১),সোহাগ আখন(৩৬),সুমন(৩০),আবুল কালাম(৬৪),আজাদ((৩৫),ইয়াকুব আলী(৬০),নুর সর্দার(৫৫)। এদের সবার বাড়ী মনপুরা উপজেলার ৪নং দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২২ অক্টোবর সাগরে রাতের আধারে ইলিশ মাছ ধরার জন্য অবরোধের মধ্যে দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের জনতা বাজার লঞ্চঘাট হতে দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডেও বাসিন্দা মৃত আমির হোসেন এর ছেলে মোঃ আক্তার হোসেন মাঝির মালিকানাধীন এফবি রিনা-১ ট্রলারটি মোট ২১ জন জেলে নিয়ে মাছ ধরার জন্য গভীর সাগরে যায়।
এরপর ২৫ অক্টোবর ঘূর্ণীঝড় হামুন এর প্রভাবে অন্য মাছ ধরা ট্রলারগুলো উপকুলে আসলেও এই ট্রলারটি উপকুলে আসেনি। ঘূর্ণীঝড়ের পর এই ট্রলারের সাথে যোগাযোগ বা কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি । এর আগে ২৪শে অক্টোবর দিবাগত রাতে এফবি রিনা-১ ট্রলার মাঝি জাহাঙ্গীর এর সাথে অন্যান্য মাঝির সাথে মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়। এসময় জেলেরা জানায় যে, তারা ড্রাম বয়ার কাছে মাছ শিকার করছে। পরদিন ঘূর্ণীঝড় হামুন প্রভাব শুরু হলে তাদের সাথে মোবাইলে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
নিখোঁজ জেলেদের খোঁজে ট্রলার মালিক আক্তার হোসেন এর ভাই আবুল ও মনির ট্রলার ২টি ট্রলার নিয়ে খোঁজ করছেন। ১০দিন খোঁজা খুজির পর ট্রলার ২টি জনতা ঘাটে ফিরে এসেছেন বলে নিশ্চিত করেন জনতা ঘাটের স্থানীয়রা।
নিখোঁজ এর ঘটনায় ৩ নভেম্বর মনপুরা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন এফবি রিনা -১ এর মালিক আক্তার হোসেন।
স্বাভাবিকভাবে ৬/৭ দিনের মধ্যে মাছ ধরে কুলে আসার কথা থাকলেও ১১ দিন পারহলেও ট্রলারসহ জেলেরা ফিরে না আসায় তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নিখোঁজ জেলে শেখ ফরিদের স্ত্রী কুলসুম বেগম জানান, মালিক পক্ষ অবরোধের মধ্যে সাগরে মাছ ধরতে নিয়ে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিয়েছেন। নিখোঁজ ট্রলার এর পাশে থাকা শিপন মাঝি জানান,সাগরে বাতাস যখন বাড়ছে তখন রেডিও খুলে শুনি ৭ নম্বর বিপদ সংকেত চলে। সাথে সাথে নিখোঁজ ট্রলার জাহাঙ্গীর মাঝির কে বলে জাল টানা শুরু করি। পরে আমরা জাল টেনে ঘাটে চলে আসি। পিছন থেকে আর ঐ ট্রলারটি দেখতে পায়নি।
তবে অনেকে ধারনা করছেন ঘূর্ণীঝড় হামুর প্রভাবে সাগরে ট্রলারটি ডুবে যেতে পারে। উপজেলার বিভিন্ন আড়তঘাটে অপেক্ষা করছেন নিখোঁজ পরিবারের সদস্যরা।
এব্যাপারে মনপুরা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজ জেলেদেও সম্পর্কে মালিক পক্ষের কাছ থেকে জানতে পারলাম। নিখোঁজ জেলেদের অনুসন্ধানে খোঁজখবর ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সারা বাংলাদেশে আমাদের পক্ষ থেকে মেসেজ দেওয়া হয়েছে।